কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ নদীর সবগুলোতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল তলিয়ে ফসলের মাঠসহ কাঁচা সড়কগুলো ডুবে গেছে। দ্রুত বন্যার পানি এসে পড়ায় পানি বন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
সব নদীর পানি হু-হু করে বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গিয়ে উঠানে অনেকের ঢুকেছে পানি। কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামে শুক্রবার প্রচন্ড স্রোতে চলাচলের রাস্তা ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে আশেপাশে পানির প্রবল স্রোত।
পাশর্বর্তী মোগল বাসা ইউনিয়নের চরসিতাইঝাড় (নয়ারহাট ) মোসলেম মহরীর বাড়ী সংলগ্ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার একটি ব্রিজ প্রচন্ড স্রোতে ভাঙ্গনের সম্মুখীন।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের প্রায় চলাচলের সব রাস্তা তলিয়ে গেছে। গতকাল থেকে পানির তোড় বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। নীচু এলাকার বাড়ীঘরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। লোকজন গবাদিপশু নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে শুক্রবার দুপুর ৩টার রিডিং অনুযায়ী দুধকুমার নদী ৫৪ সে.মিটার, ধরলা নদী ২১ সে.মিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে তিস্তা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ২০ সে.মিটার এবং ব্রহ্মপূত্র নদের পানি চিলমারীতে ৩৪ সে.মিটার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাঁচ্ছে তাতে এসব নদীর পানিও দু’একদিনের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এদিকে দুধকুমার নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির ফলে তীরবর্তী পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সংস্কারকৃত রাস্তার দু’দিক তলিয়ে গিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। এমন বন্যা পরিস্থিতির কারণে প্রায় বিশ হাজার হাজার মানুষ কবলিত হয়েছে বলে বিভিন্ন উপজেলার জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, পানি বৃদ্ধির এই অবস্থা আরও ৩ থেকে ৪দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। তারপর পানি নেমে যাবে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন বাঁধ বন্যায় ডুবে যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, উপজেলাগুলোতে ইতোমধ্যে ৬৫ মে.টন চাল উপণ্ডবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে ৫৮৫ মে.টন চাল, ১০লক্ষ টাকা ও ১হাজার ৭শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে। বন্যার্তদের তালিকা করা হচ্ছে।