উপজেলা নির্বাচন রাজনৈতিক নির্বাচন নয়, এটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। যে কেউ এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। কোন রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে বক্তব্য প্রদান করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলার হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলার প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী যেকোনো ব্যক্তি ওই এলাকার ভোটার হলে কিছু শর্ত মেনে নির্বাচন করতে পারবে। নির্বাচন কমিশনের আইনে কোন আত্মীয়-অনাত্মীয়র সম্পর্ক নেই। গণতন্ত্রের চর্চা যাতে একেবারে মাঠ পর্যায়ে চলে আসে এজন্য মাঝে একটা আইন করা হয়েছিল। কিন্তু এবার সেটি তুলে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। অতএব, এই নির্বাচনে এখন আর কোন রাজনৈতিক ফ্লেভার নেই। তবে, কেউ যদি কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন করতে চায় সে অপশনটিও রাখা হয়েছে।
ইসি আলমগীর বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে বৈঠক করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেকগুলো প্রস্তাব রেখেছে তাঁদের কাছে। তাঁরাও তাঁদেরকে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের বার্তা হচ্ছে- নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হতে হবে। কোনভাবেই যেন আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়। কেউ যেন কোন প্রার্থীকে প্রচার-প্রচারণায় এবং ভোট দেয়ায় বাঁধা দিতে না পারেন। সবাই যেন সমান ভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারেন এবং ভোটাররা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেন। একই সাথে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন শান্তিপূর্ণ থাকে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সবাইকে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আসন্ন উপজেলা নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব জায়গায়ই অনেক প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। অতএব, এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না- এটি বলার সুযোগ নেই।
ইভিএম প্রসঙ্গে কমিশনার বলেন, ইভিএমই হচ্ছে একমাত্র একটা ভালো পদ্ধতি। ইতোপূর্বে বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থীরাও নির্বাচনের পর ইভিএম নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ইভিএম এর মাধ্যমে একজনের ভোট অপরজন দিতে পারেননা। ইভিএমের মাধ্যমে ভোট ছিনতাই, জাল ভোট ও প্রক্সি ভোট দেয়ার কোন সুযোগ নেই। এর মাধ্যমে সঠিকভাবে ভোট গ্রহণ সম্ভব।
ভোটের মাঠে সহিংসতা প্রসঙ্গে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইতোপূ্র্বে যেখানেই সহিংসতার খবর এসেছে নির্বাচন কমিশন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে। ইতোমধ্যে একজন সংসদ সদস্যকেও সতর্ক করা হয়েছে। ভোটের মাঠে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতারের সভাপতিত্বে হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রার্থীদের নির্বাচন সংক্রান্ত নানাবিধ দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
মানিকগঞ্জে তিনটি ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপের নির্বাচনে হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।