1. b71newstv@gmail.com : Moshiur Rahman : Moshiur Rahman
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন

রৌমারীতে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধাকে হুমকি, ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি মুক্তিযোদ্ধার

রুহুল আমিন রুকু কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
  • ৩১৩ Time View

কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী তার নির্বাচনি সভায় স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধাকে বট গাছে বেঁধে প্রকাশ্যে বিচার করার হুমকি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের কর্তিমারী বাজার প্রাঙ্গণে আয়োজিত নির্বাচনি সভায় তিনি প্রতিপক্ষের সমর্থক মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব আলীকে উদ্দেশ করে এ হুমকি দেন। তার বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ-সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোটের দিন অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি রৌমারী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে টেলিফোন প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই উপজেলায় মোট চেয়ারম্যান প্রার্থী ৮ জন। প্রথম ধা‌পের এ নির্বাচন হ‌বে আগামী ৮ মে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব আলী যাদুরচর ইউনিয়নের বকবান্দা নামাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী রৌমারী সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম শালুর নির্বাচনি প্রতীক কাপ-পিরিচের পক্ষে কাজ করছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। নির্বাচনি সভায় প্রকাশ্যে প্রতিপক্ষের সমর্থক একজন মুক্তিযোদ্ধাকে গাছে বেঁধে বিচার করার হুমকি দেওয়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থী বঙ্গবাসীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সোহরাব আলী। এর প্রতিবাদে শনিবার (৪ মে) সকালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছেন এই মুক্তিযোদ্ধা।

নির্বাচনি সভায় দেওয়া বক্তব্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী প্রতিপক্ষের কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা যে যেখানে যা কিছু বলেন না কেন আমি সব জানি। কোথায় কী বলেন, সব কিন্তু আমি জানি। রাতের আঁধারে কথা বললেও আমি জানি। ভোটের পর কিন্তু এর খেসারত আপনাদের দিতে হবে।’

এ সময় প্রতিপক্ষের সমর্থক মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব আলীর নাম উল্লেখ করে উপস্থিত লোকজনকে বঙ্গবাসী বলেন, ‘বকবান্দার সোহরাবকে চেনেন না! এই সোহরাব মানকারচরে মিটিংয়ে যায়া বলছে আমি খুনি, আমি ডাকাত। আমি বারবার নির্বাচন করি, টাকা পাই কোথায়?’

তিনি আরও বলেন, ‘ওর (মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব) কাছে টাকা চায়া নির্বাচন করছি? এই বিচারটা আপনাদের কাছে রাখলাম। আল্লাহ পাক যদি আমাকে কামিয়াবি (নির্বাচনে বিজয়ী) করে আমি প্রকাশ্যে এই বট গাছে বেঁধে ওর (মুক্তিযোদ্ধা সোহরাবের) বিচার করবো।’ নির্বাচনে কেউ তার বিরুদ্ধে গেলে ভোটের পর তাদের দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী।

প্রতিপক্ষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সাবধান করে দিচ্ছি, আমার পিঠ কিন্তু দেয়ালে ঠেকে গেছে। চুনোপুঁটি হয়ে পাল্লা দিতাছেন। কোটি কোটি টাকা খরচ করেছি। গত নির্বাচনেও (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন) ১ কোটি টাকা খরচ করছি। আপনাদের পিছেও (শায়েস্তা করতে) কিছু খরচ করবো। এটা মনে রাইখা দিয়েন।’

নির্বাচনি সভায় এভাবে বক্তব্য দেওয়ার বিষয়ে জানতে মজিবুর রহমান বঙ্গবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। আব্দুস সালাম নাকে এক ব্যক্তি তার ফোন রিসিভ করেন। বঙ্গবাসী তাকে (সালামকে) ফোন দিয়ে আরেকটি মোটরসাইকেলে করে নির্বাচনি প্রচারে বের হয়েছেন বলে জানান তিনি।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহার আলী বলেন, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধাকে গাছে বেঁধে বিচার করার হুমকি দেওয়া মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।’

রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার মো. আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনি সভায় এভাবে বক্তব্য দেওয়া আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।’

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category