সুনামগঞ্জে ভারত সীমান্তে বিএসএফের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়ত কম মূল্যে চোরাকারবারিদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার ভারতীয় পণ্য চিনি, কমলা, আনার (ডালিম),আলু,পেয়াজ,শাড়ি কাপড়, কসমেটিকস নিয়ে আসছে চোরাকারবারিরা। আর এসব পণ্য চোরাকারবারিদের কাছ থেকে ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাপ্লাই দিচ্ছেন কিছু ব্যবসায়ীরা।তারা অল্প টাকা ইনভেস্ট করে বেশি মোনাফার জন্য ভারতীয় পণ্য ব্যবসার সাথে জড়িয়ে গেছেন অনেকে। রাতের আঁধারে প্রতিনিয়ত ভারতীয় মালামাল আসছে সুনামগঞ্জ জেলার প্রত্যাকটি বর্ডার এলাকা দিয়ে। মাদক ব্যতীত অন্যান্য ভারতীয় খাবার পণ্য আটক করতে প্রশাসনের তেমন কোন আগ্রহ না থাকলেও কিশোর গেংয়ের ছিনতাই থেকে রেহাই পাচ্ছেন না ঐ সমস্ত চোরাকারবারিসহ সাধারণ ব্যবসায়ীরা। পুলিশের কাছে ভারতীয় মালামাল পাচারের ব্যাপারে জানালেও তেমন কার্যকরী কোন প্রদক্ষেপ এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি । দীর্ঘ মাসব্যাপী রাত জেগে সুনামগঞ্জের ভারতীয় বর্ডার এলাকা বিশ্বম্ভরপুর, চিনাকান্দি, তাহিরপুর,বরছড়া,টেকেরঘাট, লাউরেঘর,ডলুরা বর্ডার বাজার, আশাউরা বিজিবি ক্যাম্প, বনগাঁও বিজিবি ক্যাম্প,দোয়ারাবাজার বাঁশতলা এলাকা এবং শহরের ইব্রাহিমপুর, কাইয়েরগাঁও ,ওয়েজ খালি,চানদি ঘাট, হালুয়াঘাট, উকিলপাড়া, কাঁচা বাজার , দিরাই রাস্তা ঘুরে ক্যামেরায় ফোঁটে উঠে ভারতীয় মালামাল পাচার ও জড়িত সিন্ডিকেট এবং কিশোর গেংয়ের ছিনতাই বাহিনীর তথ্য ও চিত্র।
সরেজমিনে দেখা যায় গত কয়েক মাস যাবৎ সুনামগঞ্জ জেলা জুড়ে অবাধে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা ও সাংবাদিক মহলের কিছু সাংবাদিক এবং দলীয় কিছু নেতাকর্মীসহ প্রত্যাক এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে চলছে ঐ সমস্ত চোরাই ব্যবসা।
অনুসন্ধানে জানা যায় এই ভারতীয় পণ্য ব্যবসা চালু হওয়ার কারনে কিছু কিছু মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক ব্যবসা ছেড়ে ভারতীয় চিনি, কমলা,আনার,আলু,পিঁয়াজের ব্যবসা শুরু করেছেন। যার ফলে প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিগণ ঐসমস্ত ভারতীয় খাদ্য পণ্য রাতের আঁধারে প্রতিনিয়ত চোখের সামনে গেলেও কঠিন ভাবে দমন করতে আগ্রহী নন। তবে মাদক বন্ধে কঠিন অবস্থানে রয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জানা যায় ভারতীয় খাদ্য পণ্য ফল আটক করে মামলা দায়ের এবং সিজারলিস্ট করে আদালতে প্রেরণ করে নিলাম করতে যে সময় লাগে সেই সময়ের মধ্যে ফল নষ্ট হয়ে দুই টাকার মুল্য থাকেনা । যার কারনে কমলা,আপেল,ডালিম, আলু, পেঁয়াজের উপর তেমন প্রশাসনের অভিযান নেই বল্যে ও চলে। তবে চিনি , গরু,মহিষ, কসমেটিকস ,মাদক আটকের ব্যাপারে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মাঝে মধ্যে পুলিশের অভিযান দেখা গেলেও অনেক কর্মকর্তাদের যোগসাজসে সিংহ ভাগ ভারতীয় পণ্য পাচার করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাপ্লাই দিচ্ছেন কিছু ব্যবসায়ীরা। জানা যায় কিছু পুলিশ ,সাংবাদিক , জনপ্রতিনিধিদের এবং উগ্রবাদী কম বয়সী নেতাদের ম্যানেজ করেই চলছে রাতের আঁধারে প্রতিনিয়ত ভারতীয় চোরাকারবারিদের রমরমা ব্যবসা। সবকিছু ম্যানেজ করলেও কিশোর গেংয়ের হাত থেকে রেহাই পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে ঐ সমস্ত চোরাকারবারিদের। ট্রাক দিয়ে ভারতীয় পণ্য শহরের ওয়াজখালী পারি দিয়ে দিরাই রাস্তা পয়েন্ট পর্যন্ত যাওয়ার আগেই ট্রাক আটক করে ড্রাইভারকে মারধর করে মোখষধারী কিশোর গেংয়ের সদস্যরা ঐ সমস্ত ভারতীয় মালামাল ছিনতাই করে নিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। শুধু তাই নয় সাংবাদিক পরিচয়ে ট্রাক আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ না করে চাঁদাবাজি করে চলেছেন কিছু অসাংবাদিক। যাদের কোন নাম গন্ধ নেই সাংবাদিক সমাজে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভূক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়। তারা বলেন এন্ডা ডট কম, ডান্ডা ডট কম, আজাইরা টিভি,বাজাইরা টিভির কার্ড দেখিয়ে ট্রাক আটক করে টাকা এবং মালামাল লুটপাট করে নিচ্ছেন অনেকে। অথচ খোঁজ নিয়ে জানা যায় কোন পেশাদার সাংবাদিক ঐসমস্ত কার্যকলাপের সাথে জড়িত নেই। তাহলে কারা ঐসমস্ত কার্যকলাপ করে সাংবাদিক সমাজকে প্রশ্নবৃদ্ধ করে? যদি কোন প্রকৃত সাংবাদিক নিউজের কাজে ট্রাক আটক করতেন তাহলে প্রতিবেদন প্রকাশ করতেন? যেহেতু সমাজে চোরাকারবারিদের নিয়ে সুনামগঞ্জ তেমন কোন প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে না তাতে বুঝাই যায় এরা সাংবাদিক নন । আর যারা প্রকৃত সাংবাদিক তারা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন এই দৃশ্য ও চোঁখে পড়ে। এছাড়াও রাতে ক্রাইম সিন ভিডিও ধারন করতে গিয়ে দেখা যায় শহরের পরিচিত এবং উগ্রবাদী ছেলেদের ব্যবহার করে সক্রিয় ভাবে চোরাকারবারিরা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে তাদের লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল পাচার করে নিয়ে যাচ্ছেন । এসময় পেশাদার সাংবাদিকরা সরাসরি স্পটে হাজির হলে
তাদের হাতে নিউজ না করার জন্য ২/৩ হালি কমলা অথবা ডালিম হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি নিউজ না করার জন্য হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়। ১৫/২০দিন ঐ সমস্ত চোরাকারবারিদের রঙ্গলীলা সরেজমিনে জানতে গিয়ে বাধ্য হয়ে অনেক সাংবাদিক কমলা হাতে নিয়ে নিউজ না করে বাড়িতে ফিরে যান এমন দৃশ্য দেখা যায়। আবার হামলার ভয়ে অনেক সাংবাদিক মুখবুজে নিরব ভূমিকা পালন করে কমলা আনার খেয়ে দুচোখ ভরে দেখছেন ঐসমস্ত কার্যকলাপের চিত্র। কি আর করা যেখানে প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিরব ভূমিকা পালন করেন সেখানে সাংবাদিকরাইবা কি করবেন? সব মিলিয়ে চলছে কমলার বনভাস। যে পাচ্ছেন সেই খাচ্ছেন কেউ ছিনতাই করে,কেউ মালামাল কেরিং করে, কেউ হুমকি দিয়ে, কেউ টুকেন দিয়ে। সব মিলিয়ে ভারতীয় চোরাকারবারিদের রমরমা বাণিজ্য মেলা চলছে হরিলুঠের মত। ঐসমস্ত কার্যকলাপের কারণে যেমন বাড়ছে সিন্ডিকেটের সংখ্যা তেমনি বাড়ছে কিশোর গেংয়ের সংখ্যা। প্রতিনিয়ত হচ্ছে ট্রাক ছিনতাই এবং কিশোর গেংয়ের মারামারি হানাহানি। আর পাঁঠার বলি হচ্ছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। তিরপাল মোরানো ট্রাক দেখলেই আটক করে আলু, পিঁয়াজ,সবজিও ছিনতাই করে নিয়ে যায় ঐ সমস্ত কিশোর গেংয়ের সদস্যরা। এসমস্ত কার্যকলাপ বন্ধ না হলে যে কোন মূহুর্তে ভয়াবহ রূপ ধারণ করে হতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দ্রত গতিতে কিশোরগেংয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সার্বিক দিক বিবেচনা করে আইনানুগ ব্যবস্তা গ্রহন করবেন এমনটির আশাবাদ ব্যক্ত করেন ব্যবসায়ী, ট্রাক ড্রাইভার ও সাধারণ মানুষেরা।##