1. b71newstv@gmail.com : Moshiur Rahman : Moshiur Rahman
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন

নওগাঁর মহাদেবপুরে ইউপি চেয়ারম্যান ও গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে

মোঃ মিজানুর রহমান মানিক নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : শনিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৪
  • ২৭৭ Time View

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার চাঁন্দাশ ইউপি চেয়ারম্যান ও কর্মরত গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে একজন সেবাপ্রার্থীকে বেদম মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে এলাকার মানুষ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে। তবে ওই ইউপি চেয়ারম্যান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এঘটনায় এলাকায় বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

ভূক্তভোগি উপজেলার চাঁন্দাশ ইউনিয়নের লাউডাঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে মিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন যে, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা রয়েছে। ওই মামলায় অবৈধভাবে জেতার জন্য প্রতিপক্ষরা তার মৌরশ মৃত গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী মৃত আয়মন বেওয়ার নামে চাঁন্দাশ ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে একটি ভূয়া ওয়ারিশান সার্টিফিকেট হাসিল করেন। ওই সার্টিফিকেটে উল্লেখ করা হয়েছে যে আয়মন বেওয়ার আশকর ও লস্কর নামে দুই ছেলে এবং হালিমা নামে এক মেয়ে ওয়ারিশ ছিল। কিন্তু মিরাজুল দাবি করেন যে, এরা আয়মন বেওয়ার কেউ নয়। আশকরের মৃত্যু সনদে দেখা যায় তার পিতার নাম মৃত আলম। গত ৫ মার্চ তিনি চাঁন্দাশ ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে আয়মন বেওয়ার একমাত্র বৈধ ওয়ারিশ ভাই মৃত অবির উদ্দিনের নামে ওয়ারিশান সার্টিফিকেট নেয়ার আবেদন করেন। ইউপি চেয়ারম্যান আবেদনপত্রটি এন্ট্রি না করেই তা তদন্ত করার জন্য কর্মরত গ্রাম পুলিশ মমিনুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। ৭ মার্চ বিকেলে গ্রামের পার্শ্ববর্তী জন্তইল হাটে মিরাজুলের সাথে গ্রাম পুলিশ মমিনুলের দেখা হলে মমিনুল জানায় যে, আগের সার্টিফিকেটই ঠিক। নতুন নামে সার্টিফিকেট দেয়া যাবে না। মিরাজুল বিষয়টি ভালো করে তদন্ত করে দেখার দাবি জানালে মমিনুল আবেদনপত্রটি অর্ধেক ছিঁড়ে ফেলে মিরাজুলের দিকে ছুঁড়ে ফেলে দেন বলে মিরাজুল অভিযোগ করেন। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি হয়। এতে মিরাজুলের টিশার্ট ছিঁড়ে যায়। এই ঘটনার পর মিরাজুল বাড়ি ফিরে যান। রাত সাড়ে ৭ টার দিকে গ্রাম পুলিশ মমিনুলের নেতৃত্বে একদল গ্রাম পুলিশ মিরাজুলের বাড়ি এসে তার দরজায় লাথি দিয়ে খুলে মিরাজুলকে জোরকরে তুলে নিয়ে প্রকাশ্যে রাস্তায় লাঠি দিয়ে পিটাতে পিটাতে জন্তইল বাজারে নিয়ে যায়।

সেখানে সাবেক মেম্বার পরিমল চন্দ্রের ঘরে তুলে দরজা বন্ধ করে দেয়। এরপর চাঁন্দাশ ইউপি চেয়ারম্যান, সাবেক মেম্বার পরিমল চন্দ্র ও কয়েকজন গ্রাম পুলিশ লাঠি দিয়ে মিরাজুলকে বেদম প্রহার করেন। পরে তাকে মারাত্মক আহত অবস্থায় মহাদেবপুর থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সারারাত থানা হাজতে থাকার সময় তাকে কোন খাবার দেয়া হয়নি। পরদিন সকালে থানা পুলিশ তাকে নওগাঁ কোর্টে পাঠালে বিজ্ঞ বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পেয়ে মিরাজুলকে তার পরিবারের সদস্যরা নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। ১২ মার্চ তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি আসেন। এদিন গ্রামবাসীরা জন্তইল বাজারে এক বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। বক্তারা এই অমানবিক ঘটনার বিচার দাবি করেন। তারা অভিযোগ করেন যে, সাবেক মেম্বার পরিমলের অফিসটি একটি টর্চার সেল। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনকে এখানে জিম্মি করে নির্যাতন করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিকেলে ভূক্তভোগি মিরাজুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘটনার এক সপ্তাহ পরও তিনি স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারছেন না। দুজনের কাঁধে ভর দিয়ে বাড়ির বাইরে আসতে সক্ষম হন তিনি। তার দু’পা এখনো ফোলা এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাঠি দিয়ে পিটানোর দগদগে কালো দাগ রয়েছে। তিনি জানান, গ্রাম পুলিশ মমিনুলের সাথে ধাক্কাধাক্কির জের ধরেই তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে এভাবে মারপিট করে উল্টো তার বিরুদ্ধেই মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে চাঁন্দাশ ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদান নবী রিপন মিরাজুলকে মারপিটের বিষয় অস্বীকার করে জানান, ঘটনার দিন পুলিশের সাথে তিনি জন্তইল বাজারে গিয়ে আহত মিরাজুলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। গ্রাম পুলিশ মমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, তাকে মিরাজুল ধাক্কা দেওয়ায় হাটের লোকজন তাকে মেরেছে। তবে তিনি মিরাজুলের বিরুদ্ধে কোন মামলা দায়ের করেননি বলেও জানান। সাবেক মেম্বার পরিমল তার অফিসে কোন টর্চার সেল নেই বলে দাবি করেন। মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন জানান, মিরাজুলের বিরুদ্ধে কেউ কোন মামলা দায়ের করেনি। তবে হাটের লোকজনের সাথে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় তার বিরুদ্ধে সাধারণ ডাইরি এন্ট্রি করে ১৫১ ধারায় চালান দেয়া হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category