1. b71newstv@gmail.com : Moshiur Rahman : Moshiur Rahman
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১০:২৫ পূর্বাহ্ন

রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে জমি কেনার অভিযোগ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রভাস চন্দ্র সেনের বিরুদ্ধে

কে এম সাইফুর রহমান গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১৭৫ Time View

 

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার প্রভাস চন্দ্র সেনের বিরুদ্ধে সরকারের রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিসার এবং তার স্ত্রী পিংকি দাসের নামে সম্প্রতি ৭০ লক্ষ টাকা দিয়ে গোপালগঞ্জ শহরের পাচুড়িয়া সংলগ্ন তেঘরিয়া মৌজায় চার (৪) শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন তিনি। জমির তফসিল বি.আর.এস খতিয়ান নং – ৭৮৭, বিআরএস দাগ নং – ৩৭, এসএ খতিয়ান – ৮২২, আরএস খতিয়ান – ৬৬৫, যার দলিল নম্বর – ৮৪৩১/২৪ তারিখ ০২.১২.২০২৪ খ্রিঃ। দাতা যথাক্রমে রশিদা খানম, আজিজুর রহমান ও আরিফুর রহমান। জমি গ্রহীতা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার প্রভাস চন্দ্র সেন এবং তাঁর স্ত্রী পিংকি দাস। পৌরসভার মধ্যে সাফ কবলা দলিল রেজিস্ট্রেশনে অসৎ উপায় অবলম্বন করে ৭০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ক্রয়কৃত জমির মূল্য ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন করে ৪০ লক্ষ টাকা দেখিয়ে সরকারি বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন ওই দম্পতি। উক্ত রেজিস্ট্রেশনে ৩০ লক্ষ টাকা কম উল্লেখ করায় সরকার বড় অংকের টাকার (ত্রিশ লাখ টাকার ১২% হারে ৩,৬০,০০০/=) রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। জানা যায় তার স্ত্রী একজন গৃহিণী। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায় ৭০ লক্ষ টাকা তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত। তার আয়কর নথিতে এ টাকার কোন তথ্য দেওয়া হয়নি।

সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রাণিসম্পদ অফিসার প্রভাস চন্দ্র সেনের নিকট জানতে চাইলে তিনি এ টাকার উৎস সম্পর্কে কোন সঠিক জবাব গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট দিতে পারেননি। তিনি সুকৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। অনুসন্ধানে জানা যায় ৭০ লক্ষ টাকার জমি ৪০ লক্ষ টাকা তিনি লিখেছেন।

এ বিষয়ে বিক্রেতাদের সাথে আলাপ করে জানা যায় তারা ক্রেতার নিকট থেকে ৭০ লক্ষ টাকা বুঝে পেয়েছেন। দলিল রেজিস্ট্রেশনে ৪০ লক্ষ টাকা উল্লেখের বিষয়ে দাতারা বলেন, প্রভাস চন্দ্র সেন তাদের বলেছেন ৩০ লক্ষ টাকা কম লিখলে তার সুবিধা হয়, কারণ তিনি সরকারি চাকরি করেন ৭০ লক্ষ টাকা লিখলে তার অফিসে অসুবিধা হতে পারে। তাই তারা সরল বিশ্বাসে বিষয়টি মেনে নিয়েছেন। ৭০ লক্ষ টাকার বিষয়ে প্রভাস চন্দ্র সেন বলেন, আমি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে জায়গা কিনেছি এটাই সঠিক। কিন্তু তিনি ৪০ লক্ষ টাকারও উৎস সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য দিতে পারেননি। এ টাকা গুলো তার আয়কর নথিতে দেখানো আছে? কি-না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আমার এবং আমার স্ত্রীর ডিপিএস ভেঙ্গে এবং ধার দেনা করে এ টাকা সংগ্রহ করেছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার অফিসের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, তিনি অফিস সময় ব্যক্তিগতভাবে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন এলাকায় গরু-ছাগল-হাঁস মুরগির চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। গণমাধ্যমকর্মীরা তার সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য তার দপ্তরে গেলে, সাক্ষাৎকার শেষে এক পর্যায়ে তিনি উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীর হাতে হলুদ রঙের একটি খাম দিয়ে তাকে দেখে শুনে রাখার অনুরোধ জানান। পরে খামটি ফেরত দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা ওই দপ্তর ত্যাগ করেন। সংশ্লিষ্ট সকলে তার দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি জানিয়েছেন। একটি সূত্রে জানা যায় দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা দিয়ে তিনি তার নিজ এলাকা ও শশুর বাড়িতে নামে- বেনামে আরো সম্পদ ক্রয় করেছেন। সঠিক তদন্ত করলেই এর সত্যতা পাওয়া যাবে।

গোপালগঞ্জে সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার হিসেবে যোগদানের কয়েক বছরের মধ্যেই জেলা শহরে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের জমি কেনার বিষয়ে এবং জমি রেজিস্ট্রেশনে বিপুল পরিমাণ সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ গোবিন্দ চন্দ্র সরদারের নিকট আমাদের প্রতিনিধি জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ মশিউর রহমান জানান সম্পদের তথ্য গোপন করা এবং সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া গুরুতর অপরাধ। দুর্নীতি ও অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে দুদক সেই সকল দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category