ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলায় ভুয়া ফেসবুক আইডি খুবই ছড়াছড়ি দেখা যাচ্ছে ইদানিং, ভুয়া ফেসবুক আইডি দিয়ে বিভিন্নভাবে চাঁদাবাজি হয়রানি ও সম্মানী ব্যক্তিকে অসম্মানী করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করায় মূল উদ্দেশ্য।
তারই ধারাবাহিকতায় আলফাডাঙ্গায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভূয়া আইডি খুলে এক সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যদের ছবি ব্যবহার করে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্ট দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
শনিবার (১ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য রতন পাল তার নিজ এলাকা উপজেলার সদর৷ ইউনিয়নের জাটিগ্রাম এলাকায় এ সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ছাড়াও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ওই এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্য পাঠ করে ভুক্তভোগী রতন পাল বলেন, এক অশুভ চক্র ফেসবুক থেকে ছবি সংগ্রহ করে আমার মেয়ে ও পরিবারের সদস্যদের নামে ভূয়া আইডি খুলে গত দুইবছর ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবান্তর ভাষা ব্যবহার করে আমাদের মানসম্মান নষ্ট করার অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা অধ্যবধি অনেক সহ্য করে চলেছি। কিন্তু চক্রটি ইদানীং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এজাতীয় ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্টের মাধ্যমে অপবাদ দিয়ে আমাদের হয়রানী করার চেষ্টা করছে। এমতাবস্থায় সমাজে আমাদের মুখ দেখানো লজ্জাস্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের কাছে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভুক্তভোগী রতন পাল বলেন, আমরা সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কারা ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে অবমাননাকর পোস্ট করেছে, আমরা কিছুই জানি না। এ ঘটনার পর থেকে আমাদের পরিবার দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। যে কোন সময় আমার পরিবারের ওপর সাম্প্রদায়িক আক্রমণের আশঙ্কা করছি। আমাদের অনুরোধ, এই ধরণের ভূয়া ও মিথ্যা অপবাদ কেউ বিশ্বাস করবেন না। এ ঘটনায় আলফাডাঙ্গা থানায় দুইটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। বিষয়টি আলফাডাঙ্গার থানার অফিসার ইনচার্জ নিশ্চিত করেন।
এসময় এই অশুভ চক্রকে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে নিরাপত্তা বিধানে প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান ভুক্তভোগী পরিবার।
স্থানীয়রা জানান, আমরা যখন ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্ট দেখি, তখন বুঝতে পারি, এটা ভূয়া আইডি। পরে এলাকার মেম্বারসহ ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা ভুক্তভোগী হিন্দু পরিবারের পাশে দাঁড়াই। এ কারণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারেনি। তবে এই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকার বাহিরের মানুষের মধ্যে বিভ্রান্ত তৈরী হয়েছে। সবাইকে বলবো এধরণের গুজব বিশ্বাস করবেন না। আমাদের এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সব সময় ছিল, থাকবে। মূল আসামিকেন৷ দ্রুত খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
জানতে চাইলে আলফাডাঙ্গা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) হারুন-অর রশীদ আরো বলেন, ঘটনাটি খুবই গুরুত্বসহকারে নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। কারা এমনটান করেছে, সেই তথ্য বের করতে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী পরিবারকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।
ছবি ও সংবাদঃ
এস এম জাহিদ, ফরিদপুর।