1. b71newstv@gmail.com : Moshiur Rahman : Moshiur Rahman
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ০৭:২৫ অপরাহ্ন

কোটালীপাড়ায় চিকিৎসক অনুপম বাড়ৈ’র বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ, মিথ্যা অভিযোগে জেলহাজতে হতভাগা পিতা সোহেল হাওলাদার

কে এম সাইফুর রহমান গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫
  • ১৭৫ Time View

 

কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ডাঃ অনুপম বাড়ৈর বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) কর্ম ক্ষেত্রে অনুপস্থিত ও দায়িত্বে অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ ও হাসপাতালের নার্স কর্তৃক ভুল চিকিৎসায় স্ত্রী ও নবজাতক হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ওই দিন দায়িত্বরত অজ্ঞাত এক নার্সের বিরুদ্ধে। পরে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডাঃ অনুপম বাড়ৈ’র আত্মীয়-স্বজন বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে মালি-মামলা না করার জন্য অনুরোধ জানান। বিষয়টি ভুক্তভোগীর পরিবার মেনে নেয়। এরপর ভুক্তভোগী সন্তান হারা পিতা সোহেল হাওলাদার হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন অসুস্থ স্ত্রীর ছাড়পত্র নিয়ে অভিযুক্ত ওই ডাঃ এর সাথে দেখা করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে অভিযুক্ত ডাঃ অনুপম বাড়ৈ ও তার লোকজন সোহেল হাওলাদারকে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করে। পরবর্তীতে থানায় খবর দিয়ে আহত সোহেল হাওলাদারকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয় বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য অভিযুক্ত ডাক্তারের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবসায়ীরা ও তাদের লোকজন মিডিয়ায় সোহেল হাওলাদার এর বিরুদ্ধে মিথ্যা বক্তব্য দেন এবং তাদেরকে হেয় করতে রাজনৈতিক তকমা ও সংযুক্ত করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সোহেল হাওলাদার অভিযুক্ত চিকিৎসক ও তাঁর স্টাফদের পরিকল্পিত হামলায় গুরুতর আহত হয়ে পিঠে একাধিক আঘাতের চিহ্নের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে যা পরবর্তীতে ভাইরাল হলে এ বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই কোটালীপাড়া উপজেলা সহ জেলা ব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে‌, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বইছে নিন্দার ঝড়। সকলেই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষী চিকিৎসক ডাঃ অনুপম বাড়ৈ সহ অভিযুক্ত সকলকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোর দাবি জানান।

ভুক্তভোগীর আপন ছোট ভাই বায়েজিদ হাওলাদার গণমাধ্যমকে জানান, ওই চিকিৎসক ডাঃ অনুপম বাড়ৈর অবহেলা ও গাফিলতিতে আমার ভাই-ভাবী তার নবাগত পুত্র সন্তান হারিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা যেন কোন আইনী পদক্ষেপ না নেই সেজন্য ওই চিকিৎসকের আত্মীয়-স্বজন (নাম মনে নেই তবে একজন ধারা বাশাইল কলেজের আইটি শিক্ষক বলে পরিচয় দিয়েছিলেন, দেখলে চিনবো) গত ২৯ মে বৃহস্পতিবার রাতে আমাদের বাড়িতে এসে হাতে পায়ে ধরে অনুরোধ জানান। পরের দিন ৩০ মে সকালে কোটালীপাড়ার ঘাঘর বাজারে আমাদের কাপড়ের দোকানে “হাওলাদার ক্লথ স্টোর” -এ গিয়ে আমার বাবার নিকট অনেক অনুরোধ জানান আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় যেন কেউ কোন জিডি বা মামলা না করেন। অথচ সেই চিকিৎসক আমার ভাই হাসপাতালে ছাড়পত্র আনতে গিয়ে সেই ডাক্তারকে স্বাভাবিকভাবে সেই দিন হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার কারণে আমার বড় ভাই সোহেল হাওলাদারকে ওই ডাক্তার সহ তার লোকজন নির্দয়ভাবে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে, মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। পরে আমরা কোটালীপাড়া থানায় গিয়ে মামলা করতে চাইলে ওপরের মহলের চাপ আছে বলে আমাদের মামলা নেওয়া হয় না,। সরকারি ছুটিতে আদালত বন্ধ রয়েছে, আদালত খুললে আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে আদালতে বিচার চাইবো। প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমরা অভিযুক্ত ডাঃ অনুপম বাড়ৈ সহ জড়িত সকলের কঠিন বিচার চাই।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সোহেল হাওলাদারের স্ত্রী, সন্তান হারা অপর ভুক্তভোগী মা সাদিয়া বেগম অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. অনুপম বাড়ৈ এবং কর্তব্যরত নার্সদের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় তাদের নবজাতক সন্তানের মৃত্যু এবং তাকে ভুল ওষুধ খাইয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ তুলে দোষীদের বিচার দাবি করেন।

এদিকে কর্তব্যে চরম অবহেলা, গাফিলতি ও ভুল চিকিৎসায় নবজাতক হত্যা, প্রসূতি মাকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ ওঠা কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত অভিযুক্ত ডাঃ অনুপম বাড়ৈর বক্তব্য নিতে কোটালীপাড়ায় গিয়ে তাকে না পেয়ে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ৫ম তলায় এসি রুমে শুয়ে রয়েছেন জেনে সত্য এবং বস্তুনিষ্ঠ তথ্য উদঘাটনে ও ছায়া তদন্তে বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে সরেজমিনে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সেই কক্ষে গিয়ে তিনি শরীরের কোথায় কোথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন তা দেখতে চাইলে এবং তার সাথে এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে চাইলে সে গুরুতর অসুস্থতার ভান করে তার সাথে থাকা ব্যক্তি (পরিচর্যাকারী) কে দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলানোর চেষ্টা করেন। প্রসঙ্গত ঘটনার শুরু থেকেই বিতর্কিত ওই চিকিৎসক ডাঃ অনুপম বাড়ৈর শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন কেউ দেখেননি। এমনকি ওই চিকিৎসককে সোহেল হাওলাদার হামলা বা মারধর করেছেন এমন কোন আঘাতের চিহ্ন বা প্রমান অভিযুক্ত ওই ডাঃ দেখাতে পারেননি। গণমাধ্যমকর্মীরা পুনরায় তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে চাইলেও তিনি তা দেখাতে পারেননি। এমনকি তার শরীরে পুশকৃত স্যালাইনের সূচের দিকের অংশ আদৌ তার শরীরে পুশ করা হয়েছে কিনা তাও দৃশ্যমান নয়। যা নতুন করে আরেকটি রহস্যের জন্ম দিয়েছে, কেননা সে গায়ে ফুলশার্ট পরিহিত অবস্থায় ছিলেন এবং স্যালাইন পুশকৃত ডান হাত কম্ফোটার দিয়ে আবৃত করে রেখেছেন তিনি।

অভিযোগ উঠেছে বিতর্কিত চিকিৎসক ডাঃ অনুপম বাড়ৈ ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা সহ আইনী ঝুটঝামেলা এড়াতে ও নিজের সরকারি চাকুরি বাঁচাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে অসুস্থ হওয়ার নাটক সাজিয়েছেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে এ অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা।

এ বিষয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী ও ভুক্তভোগী সোহেল হাওলাদারের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বাদী হাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার বিবরণ না দিয়ে কৌশলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন, আমি ফেসবুকে দেখেছি, উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে আমি উক্ত মামলার বাদী হয়েছি।

এদিকে প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট নির্দোষ ও ভুক্তভোগী সোহেল হাওলাদারকে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি প্রদান এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোর দাবি সহ রোগাক্রান্ত কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি মুক্ত রোগী বান্ধব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিণত করার জোর দাবি জানিয়েছেন রোগী ও তার স্বজনেরা এবং সচেতন মহল।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category