মানিকগঞ্জের ঘিওরে এক সপ্তাহের ব্যবধানে একই ছাপড়াঘরে দ্বিতীয়বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সব মিলিয়ে ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ঘর মালিক জাকির হোসেন ও ভাড়াটিয়া মুরাদ হোসেন।
বুধবার(২৭ মার্চ) ভোর ৬টার দিকে উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের বড় ধূলণ্ডী গ্রামের মৃত,শফিজ উদ্দিনের ছোট ছেলে জাকির হোসেনের ছাপড়া ঘরে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
প্রত্যক্ষদর্শী ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. আলম শেখ মোবাইল ফোনে জানান, এই ঘরে রাতে তিনি এবং পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার গুলজার হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী থাকেন। কিন্তু গুলজার দেশের বাড়ি চলে যাওয়ায় ঘরে তিনি একাই ছিলেন। বুধবার ভোরে নামাজ পড়ে আলম শেখ ওই ছাপড়া ঘরে শুয়ে ছিলেন। এসময় কয়েকজন ছেলে ঘরের বেড়ায় আঘাত করে পূর্বদিকে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ আগুনের সূত্রপাত বিদ্যুৎ থেকে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ থেকে কিভাবে হবে? অন্য কোন কারণ থাকতে পারে। অগ্নিকাণ্ডের পর তিনি গ্রামের বাড়ি বাঘুটিয়ায় চলে যান। এখনো মানসিকভাবে আতঙ্কে আছেন বলে জানান তিনি।
মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার ছোট ঘিওর( নবগ্রাম) এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মুন্নাফ মিয়ার ছেলে মুরাদ হোসেন জানান, তিনি বড় ধূলণ্ডী গ্রামের জাকির হোসেনের ৫ কক্ষ বিশিষ্ট একটি ছাপড়াঘর ভাড়া নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যেই ভাঙারি ব্যবসা করে আসছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহে এই ঘরের পশ্চিম দিকের কক্ষে অজ্ঞাতভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সংরক্ষিত এক লক্ষ তেত্রিশ হাজার টাকার ফরমিকা ও প্লাস্টিকের ডাম পুড়ে গেছে। তবে, ওই সময় আগুনের তীব্রতা কম থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু বুধবার সকালে পূনরায় আগুন লেগে ২টি ভ্যান গাড়ি, ভুট্টা ভাঙানোর একটি হলার মেশিন, ভাঙারি মালামালসহ পূর্বদিকের ৪টি কক্ষ সম্পূর্ণরূপে আগুনে পুড়ে গেছে। যার আনুমানিক মূল্য ৩ লক্ষাধিক টাকা।
মুরাদ হোসেন আরো জানান, বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করার জন্য তিনি ঘিওর থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু ওসি সাহেব থানায় না থাকায় ডিউটি অফিসার তাকে ইফতারির পর পূনরায় থানায় যেতে বলেছেন বলে জানান মুরাদ।
ছাপড়াঘরের মালিক জাকির হোসেন জানান, সেহেরি খেয়ে তিনি বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। এমন সময় ছাপড়াঘরে অবস্থারত ভাঙারি ব্যবসায়ী আলম শেখ তাকে জানান, ঘরে আগুন লেগেছে। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে ঘিওর ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি অবহিত করা হলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। কিন্তু ততক্ষণে পূর্বদিকের ৪টি কক্ষ আগুনের লেলিহান শিখায় ভষ্মীভূত হয়ে যায়। ছাপড়াঘরের পশ্চিমদিকের কক্ষটির মাঝে ইটের দেয়াল থাকায় একটি কক্ষ অক্ষত রয়েছে।
ঘিওর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা মো. নূরুল আমিন প্রতিবেদককে জানান, আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ ঘরে অত্যন্ত নিম্নমানের বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা হচ্ছে শর্ট সার্কিট থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। ওই ঘর মালিক কিংবা ব্যবসায়ীদের যদি ইন্স্যুরেন্স করা থাকে তবে তারা ক্ষতিপূরণ পাবার দাবিতে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সুরেশ চন্দ্র রায়
০১৮১৬৫৭১৪৫৪
২৭.০৩.২০২৪।