1. b71newstv@gmail.com : Moshiur Rahman : Moshiur Rahman
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ১২:০৬ অপরাহ্ন

ধর্মপাশায় মন্দিরের দোকানকোঠা ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ এমপি রতনের সংখ্যালঘোদের মনে খুব

কে এম শহীদুল ইসলাম সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : বুধবার, ২২ মার্চ, ২০২৩
  • ২৭৯ Time View

 

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত মাধ্যমিক স্কুল এবং স্থানীয় কালীবাড়ি মন্দির কমিটির মধ্যে জমি নিয়ে দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। চলমান দ্বন্ধের জেরে গেল বৃহস্পতিবার এমপি রতন স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে এসে মন্দিরের নির্মাণ করা আটটি দোকানকোঠা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন তার লোকজনদের। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। মঙ্গলবার দোকান কোঠাগুলো ভাঙার প্রস্তুতি নেয়ার সংবাদে পরিস্থিতি মোকাবিলায় অপর পক্ষও প্রস্তুতি গ্রহন করছেন। ফলে যে কোন সময় মারাত্মক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি করেছেন এমপি রতন। তবে গত মঙ্গলবারে মন্দিরের দোকান কোঠা ভাঙ্গতে যায়নি এমপির লোকজন। এমপি’রতনের অডিও রেকর্ড ভাইরাল।
এলাকাবাসী জানান, ব্রিটিশ শাসনা মলে সুখাইড়ের জমিদার মধু চন্দ্র রায় বাহাদুর সুখাইর কালীমন্দিরের নামে ৪৫ শতাংশ জমি লিখে দিয়েছিলেন। মন্দিরের পাশে ১৯৪২ সালে একটি হাই স্কুলও প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। ওখানে জমি ছিল ১৮ শতাংশ। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় এই স্কুলের শিক্ষকরা এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ায় বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়েছিল।
মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপি হওয়ার পর ২০১৩ সালে সরকারি খাস জমিতে নিজের বাবার নামে আব্দুর রশিদ মেমোরিয়াল হাই স্কুল নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এই স্কুলের ভবন নির্মাণের সময় মন্দিরের কিছু জমি স্কুল ভবনের অংশে ঢুকে পড়েছিল বলে স্থানীয়দের দাবী। সনাতন ধর্মীরা। সম্প্রতি মন্দিরের জমির একাংশে স্কুলের ঘোষণায় সবাই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। স্কুলের সিড়ি নির্মানে বাধা দেন স্থানীয় হিন্দুরা। সিড়ি নির্মান কাজে বাধা দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন এমপি রতন। গেল বৃহস্পতিবার স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এ নিয়ে কথা বলেন এমপি রতন। এ সময় এমপি রতন স্থানীয় প্রশাসনকে মন্দিরের আটটি দোকানকোঠা ভাঙ্গার নির্দেশ দিয়ে বলেন, আপনারা না ভাঙ্গতে পারলে আমার লোকজন ভেঙ্গে ফেলবে। এই কথা শুনে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং দুপক্ষের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। এ সময় স্থানীয়রা জানান, এমপির লোকজন আমাদের মন্দিরের দোকানকোঠা ভাঙ্গতে আসলে আমরাও বসে থাকবো না। ভাঙ্গার চেষ্টা প্রতিহত করব।
ধর্মপাশা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক রুটিন দাস বলেন, ‘জমিদারের দান করা জমি আছে ৬৩ শতাংশ, এর মধ্যে ৪৫ শতাংশ মন্দিরের জন্য। বাকি অংশ স্কুলের জন্য। এমপি সাহেবের বাবার নামে স্কুল। সেটি তিনি নিজে জমি কিনে করলেই সুন্দর দেখাতো। তা তো তিনি করেননি। মন্দিরের দোকান কোঠার আয় দিয়ে সব খরচ চলে। এটি কীভাবে ভাঙার কথা বলা হয় ?” রুটিন দাসের মতো একই কথা জানালেন গ্রামের তরুণ কামনা দাস ও পিযুষ কান্তি দাস।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নবনী কান্ত দাস জানান, ৬৪ ইংরেজির এসএ রেকর্ডে কালী মন্দিরের নামে ৪৫ শতাংশ জমি রেকর্ড হয়েছে। বর্তমান রেকর্ডে কীভাবে ২২ শতাংশ মন্দির এবং ২৩ শতাংশ এমপি সাহেবের বাবার নামে রেকর্ড হলো ? মন্দিরের দোকানকোঠা ভাঙার চেষ্টা অত্যন্ত গর্হিত কাজ।
ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ বিলকিস জানান, সম্প্রীতি বজায় রেখে বিষয়টির শান্তিপূর্ন সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
ধর্মপাশা ইউএনও সীতেশ চন্দ্র সরকার জানান, “মন্দির এবং স্কুলের জমি চিহ্নিত করার পরই বলা যাবে, কার জমি কে দাবি করছে। এর আগে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। সংসদ সদস্য মহোদয় নির্দেশনা দিয়েছিলের বিষয়টি দেখার জন্য। আমি বলেছি দুপক্ষের কাগজপত্র দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন জানান, আমি মন্দিরের দোকানকোঠা ভাঙ্গার কথা বলেনি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সামনে নির্বাচন, যাঁরা এই আসনে প্রার্থী হতে চান, তাঁরা ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে মাঠ গরম করতে চাচ্ছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category