গোপালগঞ্জ জেলার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেণির স্ট্রেচার বেয়ার মো: তরিকুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে হাসপাতালের নিয়ম বহির্ভূত ডায়াগনিস্টিক সিন্ডিকেট পরিচালনা, একাধিক পদে দায়িত্ব পালন সহ হাসপাতালের সরকারি বাসা দখল করে সরকারের সম্পত্তি লুটে নেওয়ার এক লিখিত অভিযোগে পাওয়া গেছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গেলে জানা যায়, তরিকুল ইসলাম চৌধুরীর মূল পদবি ষ্টেটার বেয়ার। তিনি এলাকার প্রভাব ও হাসপাতালের উপরোক্ত কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদে কাজ করে নিজের সুবিধা লুটে নিচ্ছেন। একটু গভীরে গেলে দেখা যায় সে টিকিট ক্লার্ক এর কাজ করার সময় হাসপাতালে আসা রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার টিকেট কাটার আগে সে ভুল-ভাল বুঝিয়ে মেশিন নষ্ট বলে তার নিজস্ব ডায়াগোনস্টিক সেন্টারসহ অন্যান্য ডায়াগোনস্টিক সেন্টারে প্রেরণ করে বড় ধরনের কমিশনের টাকা হাতিয়ে নেয়। এতে করে সরকারি হাসপাতালের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আরো জানা যায়, তিনি ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী হওয়া সত্ত্বেও হাসপাতালের ভিতরের একটি ফ্ল্যাট দখল করে আছে প্রায় ১০ বছর যাবৎ। এসি ব্যবহৃত এই ফ্লাটের বিদ্যুৎ বিল তো দূরের কথা ফ্লাট ভাড়াটাও আজও পরিশোধ না করে বুক ফুলিয়ে চলছে সে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সে হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় এসকল অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে পার পেয়ে যায় বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের হিসাবরক্ষক হারুনার রসিদ এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক ব্যক্তি তিনটি স্থানে কাজ করা আইনের আওতায় আসে না, এটা সঠিক না।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের হেড ক্লার্ক জুয়েল বাচার বলেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যদি চায় তখন আমাদের পক্ষে কিছু করার থাকেনা। সে যে কাজগুলো করছে সেখানে যদি কোন লোক আগে থেকেই থাকে তাহলে এটা ঠিক না। তিনি আমাদের সাথে একমত পোষণ করে বলেন এর পরিবর্তন হওয়া উচিত।
হাসপাতালের ইলেকট্রিশিয়ান কাম পাম্প অপারেটরের দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত মো: সেলিম সিকদার বলেন, পাম্পের দ্বায়িত্ব আমার, আমার এই দ্বায়িত্ব অন্যায়ভাবে তরিকুলকে দিয়েছে স্যারেরা। আমি এর প্রতিবাদ করেছি, লিখিত অভিযোগ করেও কোনো সুফল পাচ্ছি না। আমি দ্রুত বিষয়টির প্রতিকার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্তের সাথে যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ জিবিতেষ বিশ্বাস বলেন, ব্যাপারটি আমি দেখবো। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।