1. b71newstv@gmail.com : Moshiur Rahman : Moshiur Rahman
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৫ অপরাহ্ন

নাগরপুর দপ্তিয়র নজির আলী উ”চ বিদ্যালয় সভাপতি-প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ

আজিজুল হক বাবু টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : বুধবার, ২৪ মে, ২০২৩
  • ৩৪৮ Time View

 

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়নের নজির আলী উ”চ বিদ্যালয়ের কর্মচারী পদে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের নিকটাত্মীয়দের স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটি চারটি শূন্যপদে নিয়োগ দেয়া হলেও তিনটি পদের স্বজনপ্রীতি করে সভাপতি রঞ্জু আহামেদের বোন-ভগ্নি জামাই এবং প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমানের ছেলেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম করে এ নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী ও ম্যানেজিং কমিটির ৪ সদস্যরা। এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের পরিচালা পর্ষদের সদস্য মো. বাবুল আক্তারসহ আরো ৩ সদস্য।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষকের ছেলে মো. হাফিজুর ইসলাম স্কুলের কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগ পেয়েছেন। আর আয়া পদে সভাপতি রঞ্জু আহামেদের বোন মোছা. খালেদা ও পরিছন্নীকর্মী পদে ভগ্নি জামাই মো. মাহাবুর রহমানকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তাকর্মী পদে মো. ছানোয়ার হোসেনকে নিয়োগ দেয়া হয়। সুত্রে আরো জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সভাপতি রঞ্জু আহামেদ’র মদদে অনিয়ম করে যাচ্ছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান। সভাপতির আস্থাভাজন প্রধান শিক্ষক চারটি পদে জনবল নিয়োগ দিয়ে প্রায় ১৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। চারটি পদে নিয়োগ পেতে ৮০ জন প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। আবেদনকারীদের মধ্য থেকে মাত্র ১৭-১৮ জন আবেদনকারীকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের সুযোগ দেয়া হয়। প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির কারসাজিতে গত ১৬ এপ্রিল পাতানো নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন বিকেলেই চুড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও বিদ্যালয়ের ৩ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীর নিকট উপবৃত্তির কথা বলে টাকা নেওয়া এবং করোনাকালীন সময়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপের টাকা আত্মসাৎের অভিযোগ রয়েছে।
বিদ্যালয়ের জমি দাতা নজির আলীর ছেলে মো. দুলাল হোসেন ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী পদে নিয়োগের আবেদন করেছিলেন। তিনি জানান, নিয়োগের জন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করেছিলেন প্রধান শিক্ষক। টাকা না দেয়ায় প্রবেশ পত্রে রোল নম্বর ও পরীক্ষা কেন্দ্রের নাম উল্লেখ ছাড়াই প্রবেশপত্র দেয়া হয়। ফলে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারেননি তিনি। এমন অভিযোগ করেন আরো বেশ কয়েকজন প্রার্থী। পরিক্ষার্থী সবেজ আলীর বড় ভাই ছলিম হোসেন জানান, আমার ভাইয়ের চাকুরীর বিষয়ে প্রধান শিক্ষক প্রথমে ৭ লাখ টাকা চায়। আমি নগদ ১ লাখ টাকা প্রধান শিক্ষককে দেই গ্যারান্ডার হিসেবে ওই প্রধান শিক্ষক ১ লাখ টাকার চেক দেয় আমাকে। পরবর্তীতে ১০ লাখ টাকা চাওয়াতে আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে আমার ভাইয়ের চাকুরী হয়নি। নগদ ১ লাখ টাকাও ফেরৎ  দিচ্ছে না প্রধান শিক্ষক।
এ ঘটনায় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচিত ৪ সদস্য মো. বাবুল আক্তার, মো. সাজ্জত হোসেন, এম আজিজুল হক পান্না ও মো. জমির উদ্দিন মাস্টার বাদি হয়ে ঢাকা হাই কোর্টে নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর অস্থায়ী  নিষেধাজ্ঞার আবেদন জানিয়ে ২ জনকে বিবাদি করে একটি মামলা দ্বায়ের করেছেন।
নজির আলী উ”চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান মুঠোফোনে জানান, স্বার্থ উদ্ধার না হওয়ায় তারা অনিয়মের কথা তুলছেন। এছাড়াও আমার ছেলে পরীক্ষায় পাস করেছে, নিয়ম অনুযায়ী তার চাকরি হয়েছে।
বিদ্যালয়ে পরিচলানা পর্ষদের সভাপতি ও দপ্তিয়র ইউয়িন আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক মো.রঞ্জু আহামেদ জানান, আমার বোন খালেদা ও ভাগ্নি জামাই মো. মাহাবুর হোসেন তাদের মেধায় চাকরী পেয়েছেন। কোনো অনিয়ম হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
দপ্তিয়র উচ্চ  বিদ্যালয়ের তিন বারের নির্বাচিত সাবেক সভাপতি মো. মর্তুজ আলী জানান, নিয়ম বর্হিভুতভাবে কিছু দিন পুর্বে বিদ্যালয়ের শুন্য তিনটি পদের বিপরীতে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির আত্বীয়  স্বজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টি একটি পরিবারতন্ত্রের মাধ্যমে চলছে।যমদূত  সম্ভব এই পরিবারতন্ত্র থেকে বিদ্যায়কে বের করে আনা যাবে ততই দূরতই বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বাড়বে।
এ প্রসঙ্গে দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম ফিরোজ সিদ্দিকী জানান, ইতোমধ্যে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ব্যাপারটি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে। আমি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের ( শিক্ষা ও আইসিটি) সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনী ব্যাবস্থা গ্রহন করবো।
নাগরপুর উপজেলা মাধ্রমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহীনুর ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান আছে। সতরাং এবিষয়ে কোন মন্তব্য করা উচিত হবেনা বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন আদালতের রায় অনুযায়ী পরবর্তী করনীয় নির্ধারণ করা হবে।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( শিক্ষা ও আইসিটি) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম সুজন বলেন,লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও)’র কাছে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category