গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ বাবুল হোসেনের বিরুদ্ধে উৎকোচ নিয়ে (গোপালগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়েরকৃত মিস পিটিশন নং – ৩২০/২৫) বাদী মোছাঃ মাকসুদা বেগম (মাসুদা) এর স্বাক্ষর জাল করে বিজ্ঞ আদালতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর ইউনিয়নের ভাজন্দী গ্রামের মাকসুদা ওরফে মাসুদা বেগমের সাথে। বিবাদী ফাহিমা গংদের নিকট থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে প্রকৃত সত্য ঘটনাকে আড়াল করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে জমা দেওয়ায় চরম ক্ষোভ জানিয়েছেন আদালতে ন্যায় বিচার প্রত্যাশী অসহায় পরিবারটি।
জানাযায় বাদী মাকসুদার পৈত্রিক সম্পত্তি জোর পূর্বক দখল করে পাকা স্থাপনা তুলতে গেলে, ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিস পিটিশন দায়ের করেন। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত মামলার তদন্তের নির্দেশ দেন মুকসুদপুর উপজেলা ভূমি অফিসে। পরে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ বাবুল হোসেনের নিকট তদন্ত আসলে তিনি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে যে তথ্য পান তা বদলে দিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য সংযুক্ত করে বাদী মাকসুদা বেগমের আসল স্বাক্ষরযুক্ত কাগজ সরিয়ে তার স্বাক্ষর এবং অনুপস্থিত অনেকের নাম সংযুক্ত করে এবং উপস্থিত অনেকের নাম বাদ দিয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। তদন্তের দিন যে সকল সাক্ষীদের স্বাক্ষর নেন। তার কিছুই মিল পাননি বাদীপক্ষ। এমনকি বাদীর স্বাক্ষরও জাল করে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে, নতুন করে একটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণ করেন অভিযুক্ত সার্ভেয়ার। যেখানে কোন গাছ ছিলো না, প্রতিবেদনে সেখানে দেখানো হয়েছে গাছ। বাদীর স্বাক্ষর জাল, তদন্তের সময় উপস্থিত স্বাক্ষীদের স্বাক্ষর নাই, যারা উপস্থিত ছিলেন না তাদের স্বাক্ষর পরে নিয়ে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন এ বিষয়ে অভিযুক্ত সার্ভেয়ার মোঃ বাবুল হোসেন।
স্থানীয় সোরাব আলী ফকির বলেন, আমি তদন্তের দিন উপস্থিত ছিলাম। এ জায়গায় কোন গাছ ছিলো না, এটা মাকসুদার জায়গা, বিবাদীরা জোর পূর্বক দখল নিছে। বিবাদীপক্ষ ধনী ও এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে এ নিয়ে কেউ কিছু বলতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকার সাধারণ জনগণ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সহ দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।
আমাদের প্রতিনিধি অভিযুক্ত সার্ভেয়ার (বর্তমানে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা ভূমি অফিসে দায়িত্বরত) মোঃ বাবুল হোসেনের ০১৭…..০৪ নম্বর মুঠোফোনে কল দিয়ে উৎকোচ নিয়ে বাদীর আসল স্বাক্ষরযুক্ত কাগজ বদলিয়ে তার স্বাক্ষর জাল এবং সেইদিন ঘটনাস্থলে প্রকৃতপক্ষে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদেরকে বাদ দিয়ে অনুপস্থিত লোকজনের নাম ও স্বাক্ষর সংযুক্ত করেছেন কি – না? জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং বলেন সেই দিন যারা উপস্থিত ছিলেন আমি তাদের স্বাক্ষরই নিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই আর সেই সার্ভেয়ারের বদলি হয়েছে। তবে বাদী পক্ষ না রাজি দিলে আদালত পুনরায় তদন্ত দিলে নতুন সার্ভেয়ারকে দিয়ে আমি সঠিক তদন্ত করাবো।