রুখবো দুর্নীতি, গড়বো দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ’ এই স্লোগানের উপর ভিত্তি করে ঝালকাঠিতে দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। রানান্স আপ হয়েছে ঝালকাঠি সরকারি কলেজ। রবিবার (১২জুন) সকাল ১০টায় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সুগন্ধা সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন, দুদকের দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক), টিআইবির সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), এর আয়োজনে বিতর্ক প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠিত হয়।
‘‘আইনের শাসনের অভাবই দুর্নীতি বিস্তারের মূল কারণ” বিতর্কের এই বিষয়ের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন ঝালকাঠি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ। বিতর্ক প্রতিযোগিতার মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মামুন শিবলী।
ঝালকাঠি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে তানজুম কবির জুঁই ও মো. মেহেদী হাসান এবং ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী আতিয়া রহমানের নেতৃত্বে নাফিসা আনজুম দীনা ও নুসরাত নাহার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। সেরা বিতার্তিক হিসেবে নির্বাচিত হন ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী আতিয়া রহমান।
দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির (দুপ্রক) সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহীদ ইমামের সভাপতিত্বে ও টিআইবির এরিয়া কোঅর্ডিনেটর মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মামুন শিবলী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রুহুল আমিন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পিরোজপুরের উপসহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামান, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির (দুপ্রক) সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার, সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্যবান সেন গুপ্ত প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুপ্রক সদস্য কাজী শফিকুল ইসলাম, সনাক সদস্য রাবেয়া কবির, কবিতা হাওলাদার, সৈয়দ সালাউদ্দিন ফেরদৌস, মো. ফজলুল হক পবন, সনাকের অ্যাক্টিভ সিটিজেন্স গ্রুপের (এসিজি) সদস্য সাংবাদিক অলোক সাহা, অংশগ্রহণকারী কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ ও সনাকের ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপের সদস্যবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মামুন শিবলী তার বক্তব্যে বলেন, ‘দুর্নীতি একটি ব্যাপক বিষয়। টাকা খাওয়া একটি বড় দুর্নীতি, কিন্তু আমার প্রতিবেশির প্রতি যে ভালো আচরণ করা উচিত, সেটা যদি না করি সেটাও কিন্তু দুর্নীতি। পৃথিবীর কোনো ধর্মই কিন্তু দুর্নীতি করার কথা বলেনা, তারপরও কিন্তু আমরা করে যাচ্ছি, করি। কেউ বাধ্য হয়ে করি, কেউ খুশিতে করি, কেউ মনের আনন্দে করি, কেউ মনের ভুল করে করি, কেউ অজান্তে করি, করে যাচ্ছি। কিন্তু এটা আমাদের কারোরই কাম্য না। এটা সবাই আমরা বুঝি, কিন্তু কেউই মানিনা। এবং এটা মানা খুব কঠিন, কারণ অনেক ছোট ছোট বিষয়ও কিন্তু দুর্নীতির অন্তর্ভূক্ত।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আমাদের মাঝে মোরাল স্ট্রেংন্থ তৈরি করতে চাই। সময় লাগবে, একটু একটু করে চর্চা করতে হবে। প্রতিদিন আমরা যদি একটি ভালো কাজ করি, কেউ হয়তো সেটা দেখবে না, কেউ প্রসংশা করবে না, কেউ ফেসবুকে লাইক দিবেনা। এই ছোট ছোট ভালো কাজের চর্চা করতে করতে একটা সময়ে আমরা পারবো আমাদের কাংখিত জায়গায় পৌঁছতে, আমরা সেইদিনের স্বপ্ন দেখি, আমরা একটা উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। আমরা আমাদের এই প্র্যাকটিস, এই অনুশীলনের মাধ্যমে দুর্নীতিকে রোধ করতে পারবো।’