ঠাকুরগাঁওয়ে করোনার প্রথম ডোজ না দিয়ে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়ার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে ৪ বছর ৯ মাস বয়সী শিশু আফসানা মিম। পরিবারকে না জানিয়ে পাঁচ বছরের কম বয়সী ওই শিশুকে টিকা দেয় স্বাস্থ্যকর্মীরা।
উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই শিশুকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করেন সদরের জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। করোনার ভুলে ডোজে অসুস্থ শিশুকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ছোটাছুটি করছে অভিভাকরা।
গরিব অসহায় পরিবারের সদস্যরা শিশুর এমন অবস্থা দেখে পাগলের মতো হাসপাতাল চত্বরে ছোটাছুটি করে। পরে উপায় না পেয়ে ঋণ নিয়ে মাইক্রো ভাড়া করে সন্তানকে বাঁচাতে রংপুরে ছুটে যান।
মিম সদর উপজেলার বোচাপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ওই স্কুলেই রোববার (৯ জানুয়ারি) সকালে শিশুটির পরিবারকে না জানিয়ে সনদপত্র ছাড়াই তাকে করোনা টিকা দেন দায়িত্বরত স্বাস্থ্যকর্মীরা।
আর টিকা দেয়ার পর পরই অসুস্থ শিশুটিকে পরিবারের স্বজনরা প্রথমে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুদিন চিকিৎসা নিলেও শিশুটি খাওয়া দাওয়া ও কথা বলা বন্ধ করে দিলে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায় ঠাকুরগাঁও জেনারেলের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীর বাবা আবিদ আলী অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়ে করোনার প্রথম ডোজ টিকা না নেয়ার পরেও তাকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। টিকা দেয়ার আগে অভিভাবকের সঙ্গে কেউ যোগাযোগও করেনি। পরে শিশুটির কাছেই জানতে পারেন যে তাকে করোনা টিকা দেয়া হয়েছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, সোমবার ১১টার দিকে স্কুলের সকল শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হয়। টিকা নিয়ে সবাই বাড়ি চলে যায়। বিকেলের দিকে আফসানা মিমের পরিবারের লোকজন আমাকে জানায় যে, আফসানা অসুস্থ। পরে তার মা-বাবার সঙ্গে গিয়ে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। আফসানার অবস্থা খারাপের দিকে গেলে চিকিৎসক তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করেন।
ঠাকুরগাঁও জেনারেলের হাসপাতালে সিভিল সার্জন ডা. নূর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, ঘটনা জানার পর ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কোনো ধরনের গাফিলতির প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।