আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উথলী আব্দুল গণি সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে বিদ্যালযের ম্যানেজিং কমিটি সুত্রে জানা গেছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো.সালাহ্ উদ্দিন সরকার সাক্ষরিত আদেশের অনুলিপি সূত্রে জানা যায়, আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসদাচরণের জন্য বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির প্রবিধান মালা ২০০৯ এস.আর.ও নং ৯৯/আইন/২০০৯-তাং ০৮/০৬/২০০৯ খৃষ্টাব্দ, ২৫/০২/১৪১৬ বঙ্গাব্দ অনুযায়ী ধারা ৪৫এর উপধারা (৩), (৪), (৫) এবং বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২৩এর ধারা ৪, ৫ ও ৬ (৩) ধারা ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির প্রবিধানমালা ২০০৯এর ধারা ৪৬এর উপধারা ৬এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারী কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের চাকরি বিধিমালা ১৯৭৯এর ধারা ১১ অনুযায়ী উপজেলার উথলী কেন্দ্রীয় আব্দুল গণি সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.ইউছুব আলী( ইনডেক্স নং-৪৮০৪৫০)-কে ২৮/০৩/২০২৪ খৃষ্টাব্দ হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এই অনুলিপিতে আরো উল্লেখ রয়েছে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক তাঁর মাসিক সরকারি মূল বেতনের অর্ধেক খোরাকি ভাতা পাবেন এবং বরখাস্ত বহাল থাকা পর্যন্ত বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তিনি কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না।

এবিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক ইউছুব আলীকে বেশ কয়েকবার ফোন দেয়া হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সালাহ্ উদ্দিন সরকার জানান, বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অভিভাবকসহ বিভিন্নজনের সাথে অসদাচরণের কারণে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে এর অনুলিপি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া হযেছে। পরবর্তীতে এবিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

শিবালয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের জানান, উথলী কেন্দ্রীয় আব্দুল গণি সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ মর্মে তাঁর দপ্তরে একটি অনুলিপি দেয়া হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তের পূর্বে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আপনার সাথে আলোচনা করেছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি অন্য কাজের ব্যস্ততা দেখিয়ে মোবাইল ফোন কেটে দেন।

শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন প্রতিবেদককে জানান, গত বুধবার বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভায় ব্যাপক হট্টগোল হচ্ছে এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে- এমন সংবাদের ভিত্তিতে চেয়ারম্যানসহ তিনি সেখানে উপস্থিত হন। ম্যানেজিং কমিটির তদন্তে প্রধান শিক্ষককের বেশকিছু অনিয়ম দুর্নীতি ধরে পড়লে প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়। প্রধান শিক্ষক তখন সময়ের আবেদন করেন। সভাপতি সময়ে আবেদন মঞ্জুর না করে তাৎক্ষণিকভাবে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন। সময়ে আবেদন গ্রহণ করা না করা সভাপতির এখতিয়ারভূক্ত। তবে ইউএনও তাঁদেরকে যথাযথ বিধি মেনে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিলেন। এবিষয়ে আগামী সপ্তাহে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি প্রতিবেদন ঢাকা মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে প্রেরণ করা হবে।